সাফল্য বিষয়ে মহান ব্যক্তিদের কিছু কথা ( বার্ণাডস,উইলিয়ামসন,রালফ ওয়ালডাে এমার্সন ,চার্লস সামশর উলওয়ারল,এডওয়ার্ড ভিক্টর , ফ্রাঙ্ক বেগটার এবং আইজ.এম. টারবেল )

 

সাফল্য বিষয়ে মহান ব্যক্তিদের কিছু কথা   

বার্ণাডস বলেছিলেন — আমি কৃতকার্য ব্যাপারটাকে নেহাতই ভয় মনে করি । কৃতকার্য হওয়া মানেই সমস্ত কাজ শেষ হয়ে যাওয়া । যেমন স্ত্রী মাকড়সা মিলনের পরেই পুরুষ মাকড়সাকে গিলে ফেলে । এও সেই রকম । আমি অবিরাম বেঁচে থাকা আর এগিয়ে চলাকে পছন্দ করি । অতএব আমার দরকার — অনবরত সামনের দিকে তাকানাে । পৃথিবীতে এমন বহুলােক আছে যাদের জীবনে নির্দিষ্ট লক্ষ্য নেই । তারা অর্ধেক জীবন যাপন করে । এই সব মানুষের কোন পরিবর্তন বা পরিবর্ধন ঘটে না । গতানুগতিক জীবনযাপনই এদের জীবন-দর্শন। 

  বাইবেলে আছে — যে কাজেই হাত দাও — সেই কাজের পরিণতির কথা চিন্তা করাে না । তাহলে অকৃতকার্য হওয়ার সম্ভাবনা নেই । যে সত্যিকালের সফল মানুষ তার ধর্ম কোন কাজে সফল হলেই অন্য একটি কাজে মন দেওয়া । আর সেটাই সাফল্য । একটা কাজে সাফল্য হলেই সেটা সাফল্য নয় । সাফল্যের শেষ নেই । কাজের পর কাজ করে যাওয়াই সাফল্য।

   উইলিয়ামসন ছিলেন নিউইয়র্কের সেন্ট্রাল রেলওয়েজের চেয়ারম্যান । তিনি বলেছিলেন , আমি সারাজীবনেই মনে রাখব — যেকোন কাজে কৃতকার্য হতে গেলে চাই একমাত্র উদ্দীপনা। এই উদ্দীপনাই  সাফল্যের গােপন রহস্য । যে কোন কাজে কৃতকার্য হওয়া বা না হওয়া নির্ভর করে দু'জন মানুষের দক্ষতা , শক্তি আর বুদ্ধিবৃত্তির পার্থক্যের উপর । কোন সমান যােগ্যতাবিশিষ্ট দু’জন মানুষকে প্রতিযােগিতায় অংশগ্রহন করতে দেওয়া হল । প্রতিযােগিতার শেষে দেখা গেল যে লােকটি সত্যিকার উদ্যোগী , জয়লক্ষ্মী তারই করতলগত; দেখা গেছে সর্বদা উদ্যোগীরাই জয়লাভ করে । উদ্যোগ মানে নিজের উপর আস্থা রেখে কোন কাজে উৎসাহের সঙ্গে ঝাপিয়ে পড়া । 

  আমেরিকার মনীষী রালফ ওয়ালডাে এমার্সন বলেছিলেন — পৃথিবীর কোন মহৎ বা শ্রেষ্ঠ কাজ উদ্যোগ ছাড়া সম্পন্ন হয়নি । যার মধ্যে উদ্যোগ দেখা যায় তার মধ্যেই আসে উদ্দীপনা। উদ্যোগ যেমন উদ্দীপনার জন্ম দেয় আর তার ফল হয় সাফল্য । উদ্দীপনা ঘেন সঞ্জীবনী সুধা । যে মানুষের মধ্যে উদ্দীপনার বীজ সুপ্ত থাকে তার কোন কাজ আটকায় না। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক উইলিয়াম ফ্লেকস্ তার বিখ্যাত ‘ দি এক্সাইটমেন্ট অ টিচিং ’ গ্রন্থে লিখেছেন — শিক্ষকতার কাজ আমার কাছে যেকোন কলাবিদ্যা বা ব্যবসার চেয়ে অত্যন্ত প্রিয়। এতে আছে মানসিক উত্তেজনার খােরাক । আমার কাছে শিক্ষাদান ব্যাপারটি শিল্পীর ছবি আঁকা , গায়কের গান গাওয়া আর কবির কাব্য রচনার মতাে প্রিয় । শিক্ষাদান করতে আমি খুব আনন্দ পাই । আমি সকালে উঠে ছাত্রদের স্মরণ করি । আর মনে মনে তাদের বিশ্বাস করি । তাই আমি বুঝেছি - জীবনে কৃতকার্য হওয়ার প্রধান উপায় নিঃসন্দেহে নিজের কাজে দৈনন্দিন আগ্রহ বজায় রাখা , শক্তি অর্জন করা আর এই কাজের মধ্যেই উদ্দীপনা খুঁজে পাওয়া ।

   চার্লস সামশর উলওয়ারল বলেছেন — কোন লােকই সাফল্যলাভ করতে পারে না যদি তার নিজের কাজে সে উৎসুক হয়ে উঠে । নিছক যন্ত্র কোন কাজেই সফল হতে পারে না । চার্লস শােয়বও বলেছেন — মানুষ তার প্রতিটি কাজে কৃতকার্য হতে পারে যদি কাজের প্রতি থাকে তার আনুগত্য উৎসাহ আর উদ্যম ।

   এডওয়ার্ড ভিক্টর উৎসাহ ও উদ্দীপনাকে যে কোন সাফল্যের চাবিকাঠি মনে করে বলেন— এ দুটিকে সবার আগে স্থান দিতে হবে । এদুটি সাফল্যের পথ প্রদর্শক । 

   মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বিখ্যাত জীবনবীমা ব্যবসায়ী ফ্রাঙ্ক বেগটার বলেছিলেন— আমি ১৯০৭ সালে বেসবল খেলােয়ার হিসাবে জীবন শুরু করি । এরপর কিছুদিন কাটলে আচমকা আমার জীবনে চরম আঘাত নেমে আসে । আমাকে ওরা বরখাস্ত করে । আমি গভীর উদ্দীপনা নিয়ে নিউ হ্যাভেলে ছুটে যাই । সেখানে খেলার মাঠে মন্ত্রের মতাে কাজ করি । আমার ঐ উদ্দীপনা আমার ভাগ্যের দরজা খুলে দিল ।

   প্রখ্যাত সাংবাদিক আইজ.এম. টারবেল বলেছেন — শুধু উদ্দীপনা নয় , কোন বিশেষ কাজ বা জিনিস সম্পর্কে জানতে গেলে চাই অনুসন্ধিৎসা । অনুসন্ধিৎসা সাফল্যের একটি সােপান । অনুসন্ধিৎসা জীবনের সমস্ত বাধা বিঘ্ন অগ্রাহ্য করে মানুষকে সাফল্য এনে দেয় ।

Post a Comment

0 Comments